প্রকাশিত: Mon, Jan 1, 2024 12:04 PM
আপডেট: Fri, Jun 27, 2025 6:26 PM

[১]দেশব্যাপী পাঠ্যবই বিতরণ উদ্বোধন [২]সরকার আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়: প্রধানমন্ত্রী

ইকবাল খান: [৩] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “শিক্ষার ক্ষেত্রে যত টাকা লাগে আমি দেব। বিশ্বে যত নামিদামি বিশ^বিদ্যালয় রয়েছে, তারা কিভাবে শিক্ষা দেয়, কি কারিকুলাম শিখায় সেই পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা সেরকম আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলাদেশে তৈরি করতে চাই।”

[৪] বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকালে তাঁর কার্যালয়ের শাপলা হলে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বই হস্তান্তরের মাধ্যমে ২০২৪ সালের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন। 

[৫] সোমবার থেকে সারাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।

[৬] প্রধানমন্ত্রী কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সাধারণ শিক্ষার সাথে সাথে হাতে কলমে শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। সবাই যে শুধু সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে তা নয়, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হলে কারিগরি শিক্ষার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। আমরা সারাদেশে ১শ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। কল-কারখানা গড়ে উঠবে সেখানে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের দ্বারপ্রান্তে, তার জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায় শিক্ষিত নাগরিক আমাদের প্রয়োজন পড়বে। কাজেই উপযুক্ত কর্মঠ জনগোষ্ঠী আমাদের গড়ে তুলতে হবে। 

[৭] নতুন বছর ২০২৪ সালের প্রাক্কালে বই বিতরণ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা সকলকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।

[৮] প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন শ্রেনীর বই তুলে দেন।

[৯] “নতুন বইয়ের ঘ্রান, নতুন বই পড়ে দেখা, এতে মলাট লাগানো এসবের আনন্দটাই আলাদা, বই পড়বে এবং বইয়ের যত্ন নেবে,” কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন তিনি।

[১০] শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এছাড়া, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনও বক্তব্য রাখেন।

[১১] প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব থেকে বড় কথা আমাদের প্রাইমারি স্কুলে ছেলে-মেয়ে সকলে সমানভাবে যাবার সুযোগ পাচ্ছে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে চাই। সেটা করতে হলে একমাত্র শিক্ষাই পারে সমগ্র জাতিকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে। 

[১২] প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার জীবনের একটি স্বপ্ন ছিল তিনি একজন শিক্ষক হবেন। প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। কিন্তু ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করতে না পারায় সে পথে হাঁটা হয়নি। সে সময় ছয় বছর প্রবাসে রিফুজি জীবন কাটাতে বাধ্য হন তিনি এবং তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা। সে সময় তাদেরকে দেশে আসতে দেওয়া হয়নি। তাঁর বাবাকে পাকিস্তানী শাসকেরা বার বার কারারুদ্ধ করে রাখায়ও তাদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হয়েছে। 

[১৩] “কিন্তু আমরা আমাদের পরিবারে লেখাপড়াকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই, আমাদের ছেলেমেয়েদেরকেও বলি শিক্ষা হচ্ছে সম্পদ। এমন এক সম্পদ যা তোমাদের থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না, তাই বিদ্যা অর্জন করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। তারা তাই করেছে এবং করছে,” বলেন তিনি।

[১৪] তিনি বলেন, ছোট্ট সোনামণিদেরকে আমি বলব, মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে, বাবা-মা, অভিভাবক ও শিক্ষকদের কথা মন দিয়ে শুনতে হবে এবং মানতে হবে। ক্লাসের বই মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে পাশাপাশি জ্ঞান আহরণের জন্য অন্যান্য বই ও পড়তে হবে। তাদের পরিবারে বই পড়ার চর্চাটা ছিল এখনো তিনি সুযোগ পেলে পড়েন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

[১৫] স্কুলে-স্কুলে কম্পিউটার শিক্ষা, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, কম্পিউটার ল্যাব এবং বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন যেন দেখেও অনেক কিছু ছেলে মেয়েরা জানতে পারে, শিখতে পারে তার ব্যবস্থা আমরা করেছি।